...

1 views

বুদ্ধিবৃত্তির অবমূল্যায়ন
আমাদের এই প্রজন্মটা (আমাকে ধরেই বলছি, যদিও আমি ঠিক সম্পূর্ণভাবে এই প্রজন্মের নই) মোবাইল ফোন এবং যন্ত্রের প্রতি এতটাই বেশি মোহগ্ৰস্ত ও আকর্ষিত হয়ে পড়েছে যে আমরা আজকাল আমাদের স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তি ও স্বতঃস্ফূর্ততা হারিয়ে ক্রমশ যেন যান্ত্রিক হয়ে উঠছি। আমরা আস্তে আস্তে বোকা হয়ে যাচ্ছি। আমরা বই পড়ি না, গান শুনি না, আড্ডা দিই না; নিজেকে নিয়েই বেঁচে থাকি সর্বক্ষণ। যন্ত্র আর প্রযুক্তি ব্যবহার করেই আমরা এখন সব কিছু করে ফেলছি। এমনকি কোনো কিছু জানবার থাকলেও আমরা এখন নিমেষেই গুগল্ সার্চ করে জেনে নিচ্ছি; কিন্তু আগে আমরা অনেক জায়গায় সেই বিষয়টা খুঁজতাম। গুগল্ এসে আমাদের অন্বেষণের আকাঙ্ক্ষাটাই মেরে ফেলেছে। আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি, বুদ্ধিবৃত্তি, আকাঙ্ক্ষা, চাহিদা, মানবিক গুণ, সুকুমার প্রবৃত্তি—সবই আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। তারপর এখন এসে গেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এ.আই., যার সাহায্যে মানুষ সবকিছু করে ফেলতে পারছে, যা এতদিন কেবল কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভব হওয়ার ফলে একদিকে যেমন মানবসম্পদ বা হিউম্যান রিসোর্সের অবমূল্যায়ন হচ্ছে তেমনই অপরাধের সংখ্যাও বাড়ছে। যন্ত্র যদি মানুষের সব কাজ করে ফেলে, তাহলে মানুষের আর প্রয়োজন কোথায়! তাই মানুষ হয়ে উঠছে স্বার্থপর ও আত্মম্ভরী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে সাইবার অপরাধ, দেখনদারি, নারীর পণ্যায়ন বৃদ্ধি এবং বুদ্ধিবৃত্তির ক্ষয় হচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে দেখলে বিশ বছর আগের তুলনায় আমরা এখন অত্যন্ত অসুখী জীবন যাপন করছি। এর থেকে কি মুক্তির কোনও উপায় নেই? আমরাও কি তবে আস্তে আস্তে সম্পূর্ণতই ‘machine men with machine minds and machine hearts’-এ রূপান্তরিত হব? উত্তরটা সময়ই দেবে! তবে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর, এ কথা বলাই যায়।

—কৌস্তভ মণ্ডল

20 March 2024
12-46 pm.
Wednesday
© গেছো দাদা